রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ

এলার্জি এই কথাটি আমাদের মধ্যে প্রায় সকলের চেনা পরিচিত একটি শব্দ।রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ  এবং এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয় আমরা অনেকেই জানিনা।এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অনেকেই অনেক জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করে হয়তোবা সঠিক তথ্যটি পাননি।আজকে আমি আমার এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করব।
আশা করছি আপনারা সকলে আমার লেখা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।আমি আমার এই আর্টিকেলটিতে রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহের পাশাপাশি আরো কিছু ইম্পরট্যান্ট টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।আশা করছি আপনারা আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন।

ত্বকের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

আমরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জিনিস চেষ্টা করে থাকি যেন আমাদের শরীরের এলার্জি দূর হয়ে যায়।অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে এলার্জি দূর করার চেষ্টাও করে।বিভিন্ন ঘরোয়া উপায়ে আমরা আমাদের এলার্জি দূর করতে পারবো।তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে এলার্জিকে দূর করার যেতে পারে।নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:


নিম পাতা: আমরা জানি যে নিম পাতা প্রায় সকল রোগেরই মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে এলার্জি প্রতিরোধে নিমপাতা কার্যকরী একটি উপাদান।নিমপাতাতে অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের যেকোনো রোগকে সারিয়ে তুলতে পারে।নিম পাতার তেতো ভাব আমাদের শরীরের এলার্জিকে সারিয়ে তোলে।নিমপাতা ওষুধ হিসেবেও সেবন করা যায় আবার শরীরে লাগেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

অ্যালোভেরা বা ঘৃত কুমারী: অ্যালোভেরা আমাদের যেকোনো ত্বকের সমস্যা সমাধানে কাজ করে।তাই আমাদের এলার্জি প্রতিরোধে অ্যালোভেরা একটি ঘরোয়া পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে।

নারিকেল তেল: আমরা জানি যে চুলের যত্নে নারিকেল তেল অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি তেল।কিন্তু এটি অনেকেই জানেন না যে ত্বকের জন্য নারকেল তেল খুবই উপকারী একটি উপাদান।ত্বকের যে কোন সমস্যার সমাধানে নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।সুতরাং এলার্জি দূর করতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে নারকেল তেলও কাজ করে।

লেবুর রস: লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড আমাদের শরীরের সকল প্রকার রোগকে ধ্বংস করে দেয়। আমাদের শরীরের যেকোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারে লেবুর রস।লেবুর রস অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান।যা আমাদের শরীরের মেদ কমায় শরীরের বিভিন্ন রোগ কে সারিয়ে তোলে।শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং এলার্জি প্রতিরোধেও এটি সম্পূর্ণভাবে কাজ করে থাকে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার :আমাদের আমাদের শরীরের এলার্জিকে দূর করতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান।ঘরোয়া উপায় অ্যালার্জিকে দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
বেকিং সোডা: বেকিং সোডা ত্বকের যে কোন সমস্যা এলার্জিজনিত সমস্যা কে নিমিষেই দূর করতে সহায়তা করে।

পানি: ত্বকের সমস্যা বা এলার্জির জনিত যেকোনো সমস্যাকে সারিয়ে তুলতে পারে পানি।তাই আমাদের দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত।পানি আমাদের দেহকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে।আর পানি কম খেলে আমাদের দেহে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধতে শুরু করে।তাই আমাদের ত্বক ও দেহকে সুস্থ ও ভালো রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত।

রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ 

রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে জানলে আমরা বুঝতে পারবো আমাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে কিনা এবং আমরা অ্যালার্জি নির্ণয় করতে পারব। এবং এলার্জি প্রতিরোধ করতে পারব চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এলার্জির লক্ষণ গুলো কি কি।নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: 
  • এলার্জির প্রথম লক্ষণ হল শরীরে বিভিন্ন জায়গাতে চুলকানি বের হওয়ার যেমন ঘামাচির মত দেখতে র‌্যাস।
  • ত্বকের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া।
  • এলার্জির আরো একটি লক্ষণ হলো দীর্ঘ সময় ধরে কাশি হওয়া তারপর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া।
  • চোখ নাক ও গলা চুলকানি চোখ থেকে পানি পড়া চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
  • বছরের বেশিরভাগ সময় সর্দি লেগে থাকা।
  • বার বার হাঁচি আসা।
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাকা চাকা হয়ে ফুলে যাওয়া।

দীর্ঘস্থায়ী এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়

Allos এবং Ergos এই দুটি হলো গ্রিক শব্দ।এই দুটি গ্রিক শব্দ দিয়ে গঠিত হয়েছে এলার্জি নামক শব্দটি। এলার্জেন নামক একটি পদার্থের কারণে আমাদের শরীরে এলার্জি বা চুলকানি হয়ে থাকে।এলার্জেন নামক এই পদার্থটি বিভিন্ন পদার্থের থাকে।এলার্জি নামক এই রোগটি প্রতিটি মানুষের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ মানুষই এই রোগটি দ্বারা আক্রান্ত আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক দীর্ঘ স্থায়ী এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়।
  • প্রথমত আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে কোন কোন জিনিস বা কোন কোন পদার্থ আমাদের অ্যালার্জি হয় সেগুলোকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
  • নিজেকে এবং নিজের প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক জিনিসপত্র পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • দূষণমুক্ত পরিবেশ বা দূষণমুক্ত বাতাসে থাকার চেষ্টা করা।
  • কোন পশু পাখির মাধ্যমে এলার্জি হলে তা থেকে বিরত থাকা এটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
  • বাহিরে বের হওয়ার সময় আমাদের সর্বদা মাস্কের ব্যবহার করা প্রয়োজন কারণ বাহিরের ধুলাবালি আমাদের শ্বাসনালীতে গিয়ে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
  • পশম যুক্ত কাপড় পরিধানে আমাদের সচেতন থাকতে হবে কোন কোন কারণে পশম যুক্ত কাপড়ের মাধ্যমে আমাদের শরীরে চুলকানি বা এলার্জি হয়।
  • আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের কোন কোন খাবারের দ্বারা এলার্জি হচ্ছে সেই খাবারগুলোকে আমাদের খাওয়া যাবে না।
  • এলার্জি বা চুলকানি দূর করার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • এলার্জি বা চুলকানি থাকলে আমাদের সবসময় বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • আমরা জানি মধুর বিভিন্ন প্রকার রোগ সারিয়ে তুলতে আমাদের সহযোগিতা করে তাই এলার্জির দূর করার জন্য মধু খাওয়া যেতে পারে।
  • এলার্জি রোগ প্রতিরোধে আমাদের সব সময় বেশি বেশি পরিমাণে পানি পান করা অত্যাবশ্যকীয়।
  • বাড়ির সবকিছু ধুলো ময়লা মুক্ত রাখতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ জানা থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী এলার্জি চুলকানি দূর করা যায়।কারণ লক্ষণগুলো জানা থাকলে আমরা বুঝতে পারব আমাদের শরীরে এলার্জি আছে কিনা।তখন আমরা খুব শীঘ্রই এলার্জি দূর করতে পারব।

এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়

আমরা অনেকেই এলার্জির ঔষধ সেবনে একটা ভুল করে থাকি।সেটি হলো আমাদের শরীরে যখন রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পায় তখন আমরা অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই এলার্জির ঔষধ সেবন করে থাকি এবং কোন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এলোমেলো ভাবে বিভিন্ন এলার্জির ঔষধ খেয়ে থাকি।তবে এটি আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল।ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এবং অতিরিক্ত সেবন করলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে এলার্জির ঔষধ সেবনে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়।
  • সাধারণভাবে আমরা যদি অ্যালার্জির ঔষধ খাই তাহলে আমাদের ঘুম ঘুম ভাব আসে।আর যদি এলার্জির ঔষধ বেশি মাত্রায় সেবন করা হয় তবে আমাদের সবসময় ঘুম পেয়েই থাকবে।আমরা জানি অতিমাত্রায় ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় এলার্জির ঔষধ সেবনের ফলে আমাদের শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে।যেহেতু বেশি পরিমাণে এলার্জির ঔষধ খেলে ঘুম আসে,তাই বেশি ঘুমানোর কারণে আমাদের শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। আমাদের শরীর চলতে চায় না।
  • অতিরিক্ত এলার্জির ঔষধ খেলে আমাদের বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করে।
  • এছাড়াও অতিরিক্ত এলার্জির ঔষধ খেলে আমাদের মাথা ঘোরা শুরু হয় এবং মেজাজ সবসময় খিটখিটে স্বভাবের হয়ে থাকে।যে কোন কাজ করতে গেলে কাজে মনোযোগ দেওয়া যায় না।
  • এছাড়াও অতিরিক এলার্জির ঔষধ সেবনের ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।যেমন:ত্বক ফুলে যাওয়া,কোষ্ঠকাঠিন্য ভাব,বমি বমি ভাব ইত্যাদি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • তাই আমাদের উচিত অতিরিক্ত পরিমাণে এলার্জির ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকা।কারণ এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই পরিমাণে ক্ষতিকর।

লেথকের শেষ মন্তব্য

এলার্জি হলো এমন একটি রোগ  যা আমাদের জীবনকে তেতো বিষ বানিয়ে ফেলে।এলার্জি রোগটি খুবই খারাপ একটি রোগ।যা প্রতিটি মানুষেরই অপছন্দের।কোন রোগই মানুষের জন্য ভালো নয়।আশা করছি আপনারা আমার এই আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন রক্তের এলার্জি বা চুলকানির লক্ষণ সমূহ  এবং উপকৃত হয়েছেন।আমি আমার বক্তব্যের শেষে এটাই বলতে চাই যে আমার আর্টিকেলটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের পরিবার,আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন।যাতে করে তারাও আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে কিছুটা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url