রাত জাগার ক্ষতিকর দিক জানেন কি
রাত জাগার ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। যা আমাদের জন্য জানা প্রয়োজন। আপনারা অনেকেই হয়তো এই সম্পর্কে অনেক জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করে সঠিক তথ্য পান নি। তাই আমি আমার আজকের আর্টিকেলটি উক্ত বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছি।
এটি ছাড়াও আমার আর্টিকেলটিতে আপনাদের প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেমন: রাত জেগে মোবাইল চালালে কি হয়? সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন এবং আশা করছি কিছুটা উপকৃত হবেন।
রাত জেগে মোবাইল চালালে কি হয়
আমরা কি জানি রাত জেগে মোবাইল চালালে কি হয়? রাত জাগা আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর দিক বটেই। তার ওপর যদি আমরা রাত জেগে মোবাইল ফোন চালাই সেটি আমাদের শরীরের উপর দ্বিগুণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। রাত হল আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিশ্রামের সুনির্দিষ্ট সময়। সারাদিনের বিভিন্ন কাজের ব্যস্ততার জন্য আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারে না।
আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো যদি সঠিক পরিমাণ বিশ্রাম গ্রহণ করতে না পারে তাহলে সেটি আমাদের জন্য মারাত্মক রূপ ধারণ করবে। রাতে আমরা না ঘুমিয়ে যদি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি বা চালাতে থাকি তখন সেটি আমাদের মস্তিষ্ক, চোখ এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গের ক্ষতির মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক রাত জেগে মোবাইল চালালে কি হয়?
এটি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তাই আমি আমার রাত জাগার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আজকাল আমরা সারাদিনের কাজের ফাঁকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থা।কি মোবাইল ফোনের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া দেখতে পছন্দ করি। এর পাশাপাশি আমাদের একটি খারাপ অভ্যাস হয়ে উঠেছে।
রাত জেগে এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে সময় দেওয়া এটি যেরকম একটি খারাপ অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের সাধনও করে।
- রাত জেগে মোবাইল ফোন চালালে এটি আমাদের চোখের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
- আমরা যদি অনেক রাত পর্যন্ত না ঘুমিয়ে মোবাইল ফোন চালাতে থাকি তাহলে এটি আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি সাধন করে।
- আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হারিয়ে যায় বা কমে যায়।
- রাতের অন্ধকারে মোবাইল ফোনের আলোটি আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যা আমাদের শরীরে উৎপন্ন মেলাটোনিন হরমোনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
- আমরা যখন রাত জেগে মোবাইল ফোন চালাই তখন মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর আলোটি আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি সাধন করে।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে রাত জেগে মোবাইল ফোন চালানোর মাধ্যমে এটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ছড়িয়ে থাকে। যা আমাদের শরীরের ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
- আমরা যদি রাত জেগে মোবাইল ফোন চালায় তাহলে এটি আমাদের স্মৃতিশক্তিকে অনেকটাই দুর্বল করে দেয়।
রাত জাগার ক্ষতিকর দিক
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের ঘুমানোর জন্য রাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঘুমের জন্য রাত এবং কাজের জন্য দিন হয়ে থাকে। আজকাল রাত জাগা আমাদের মাঝে প্রবল ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যেকেরই একটি খারাপ অভ্যাস হয়ে পড়েছে রাত জাগা। তবে আমরা কি জানি রাত জাগার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। অতিরিক্ত রাত জাগা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
রাতে ঘুমানোর পরিবর্তে জেগে থাকলে এটি আমাদের শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। এইজন্য অপ্রয়োজনে কখনোই আমাদের অতিরিক্ত রাত জাগা ভালো নয়। আমাদের ব্রেইন যখন রাতে আমাদেরকে ঘুমের নির্দেশ দিয়ে থাকে তখন যদি আমরা না ঘুমিয়ে অকারণেই জেগে থাকি তাহলে এর বিপরীতে আমাদেরকে ক্ষতিকর পরিণতি লাভ করতে হবে।
আজকের আমার আর্টিকেলটির মূল আলোচ্য বিষয় হলো রাত জাগার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। গবেষণায় দেখা গেছে যে রাত জাগার কারণে আমাদের শরীরে অনেকগুলো ক্ষতিকর দিক প্রকাশ পেয়ে থাকে। যেমন: উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ বা হার্টের ক্ষতি, ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, ওজন হ্রাস অথবা ওজন বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়া, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া,
রক্ত স্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা ও শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেওয়া, নিউরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়া, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, আয়ু কমে যাওয়া, চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়া, শরীর কাজের প্রতি অমনোযোগী হয়ে ওঠে। চলুন তাহলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জন্য নেওয়া যাক।
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা: অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: ব্রণ বের হওয়া, ত্বকের মেছতা সৃষ্টি হওয়া, ত্বকের গ্লো হারিয়ে যাওয়া, ত্বকের উপর কালচে আবরণ সৃষ্টি হওয়া, ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যাওয়া, ত্বকের কোষের ক্ষতি সাধন হওয়া ইত্যাদি।
হৃদরোগ বা হার্টের ক্ষতি: রাত জাগলে আমাদের হার্টের বিভিন্ন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন: হৃদরোগ আক্রান্ত করতে পারে, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়, হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, হার্ট কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
চোখের সমস্যা: আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে জেগে থাকতে শুরু করি তাহলে এটি আমাদের চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যেমন: চোখ জ্বালাপোড়া করা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত পরিমাণে কমে যাওয়া, চোখের চারপাশে কালো দাগ পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
শরীর দুর্বল: এটি একেবারেই সত্য যে অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে আমাদের শরীর অত্যন্ত পরিমাণে দুর্বল হয়ে যায়। আমাদের শরীর কাজের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যে কোন কাজের জন্য মনোযোগ আসে না।
উচ্চ রক্তচাপ: রাত জাগার অন্যতম একটি ক্ষতিকর দিক হলো উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হওয়া। রাত জাগার ফলে আমাদের শরীরের ওপর যেই প্রেসার বা চাপ সৃষ্টি হয় এর মাধ্যমে আমাদের শরীরে উচ্চ রক্তচাপ রোগটি বাসা বাঁধতে শুরু করে।
রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা: এ বিষয়ে কোন ভুল নেই যে রাত জাগার ফলে রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। আমরা যখন অতিরিক্ত পরিমাণে রাত জাগতে শুরু করি সেই সময় আমাদের শরীরের রক্ত শুকিয়ে যেতে শুরু করে এবং রক্তের বিভিন্ন উপাদান ক্ষতির মুখে পড়ে যায়। ফলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে শুরু করে। যার কারণে রক্ত শুন্যতা দেখা দেয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে রাত জাগা। গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত রাত জাগার কারণে আমাদের শরীরের স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কমে যেতে শুরু করে। এর ফলে আমাদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে নানান ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। যেমন: সুগার, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
মস্তিষ্কের সমস্যা: রাত হচ্ছে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের বিশ্রাম গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিশেষ করে আমাদের মস্তিষ্কের আরামের জন্য পর্যাপ্ত সময় হলো রাত। তাই আমরা যদি আমাদের মস্তিষ্ককে বিশ্রাম না দিয়ে রাতে জেগে থাকি তাহলে এটি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর দিক হয়ে দাঁড়াবে। আমাদের মস্তিষ্ক সারা দিন নানান কাজের জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়ে থাকে। তাই আমাদের মস্তিষ্কের বিশ্রামের অত্যন্ত প্রয়োজন হয়ে থাকে। রাত জাগলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: মস্তিষ্ক কর্মক্ষমতা হারায়, বিভিন্ন কাজের নির্দেশ দিতে বাধা সৃষ্টি হয়, মস্তিষ্ক শুকিয়ে যায় ইত্যাদি।
ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন হ্রাস: আজকাল প্রায় অনেকেই ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন হ্রাস সমস্যায় পড়ে আছে। এর একটি বিশেষ কারণ হলো রাতে না ঘুমিয়ে জেগে থাকা।
রাত জাগলে কি খাওয়া উচিত
আজকাল প্রায় অনেকেরই বিভিন্ন কাজের জন্য রাত জাগতে হয়ে থাকে। আমরা অনেকেই এই প্রশ্নটি করে থাকি যে রাত জাগলে কি খাওয়া উচিত? এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম, বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি শুরু হয়। তাই আমাদের শরীরের এই সকল পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণ করতে জানতে হবে রাত জাগলে কি আমাদের খাওয়া উচিত।
আমরা যদি রাত জেগে কাজ করি তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক অনেকটাই দুর্বল এবং ক্লান্ত হয়ে যায়। আমাদের শরীরও প্রচুর ক্লান্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়ে তাই আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরকে সজীব, সতেজ এবং সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে কিছু কিছু খাবার রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন যে সকল খাবার আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তির যোগান দেয়। সেই খাবারগুলো আমরা যদি রাতে অনেক সময় পর্যন্ত জেগে থাকি তাহলে অবশ্যই খাওয়া উচিত।
আসুন জেনে নেওয়া যাক যদি আপনি অতিরিক্ত রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন তাহলে যে সকল খাবার প্রতিদিনের ডায়েট চারটে রাখতে হবে। টক দই, ভেজিটেবল ক্রেকার, চিয়া সিড, নাশপাতি, মিষ্টি আলু, ব্ল্যাক কফি, গ্রিন টি, আপেল, পেস্তা, বাদাম, খেজুর, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, পিনাট বাটার, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি, ঘি, ওটস, ডিম, দুধ, মধু।
লেখকের শেষ মন্তব্য-রাত জাগার ক্ষতিকর দিক
সুপ্রিয় পাঠক আমার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আশা করি রাত জাগার ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। অতিরক্ত রাত জেগে থাকা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়। তাই আমাদের সব সময় চেষ্টা করতে হবে অতিরিক্ত রাত জাগা থেকে বিরত থাকা।
আশা করি আমার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা কিছুটা উপকৃত হয়েছেন। আজকের আমার আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url