কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে
আমরা সবাই প্রায় এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই যে, কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে? তাই আমি আমার আজকের আর্টিকেলটি উক্ত বিষয় নিয়ে শুরু করেছি। এই বিষয়টি ছাড়াও আমার আর্টিকেলটিতে আরো কিছু আপনাদের প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন: মেয়েদের জরায়ু ক্যান্সার কেন হয়?
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা আমার লেখা সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি আপনারা সকলেই আমার আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে করার চেষ্টা করবেন।
মেয়েদের জরায়ু ক্যান্সার কেন হয়
আজকাল নারীদের ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে। নারীরা সাধারণত যে সকল ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম একটি ক্যান্সারের নাম হল জরায়ুর মুখে ক্যান্সার। বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রেই জরায়ুতে ক্যান্সার রোগটি ধরা পড়ে থাকে অসচেতনতা এবং পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে আমাদের দেশে নারীরা জরায়ু ক্যান্সার রোগের আক্রান্ত হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশের মহিলাদের মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার নারী এই জরায়ু ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কেন মেয়েদের জরায়ু ক্যান্সার হয়। এ বিষয়টি সকল নারীদের জানা অবশ্যই জরুরি। তাই আমি আমার কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে উক্ত বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। চলুন তাহলে মেয়েদের জরায়ুর ক্যান্সার কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুন: নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
অনেক ধরনের কারণ রয়েছে যেগুলো নারীদের জরায়ুতে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। আমরা জানি আমাদের দেহের কোন স্থানের কোষগুলো বিভাজন হওয়ার সময় অনিয়ন্ত্রিতভাবে সেই বিভাজন কার্যটি হতে থাকলে সেখানে ক্যান্সার কোষের সৃষ্টি হয়ে থাকে। মেয়েদের জরায়ুতে, গর্ভাশয়ে অথবা জরায়ুর নিচের কোষ গুলো যদি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হতে থাকে।
সেখান থেকে মেয়েদের জরায়ুর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোন নারী যদি ২০ বছর বয়সের নিচে গর্ভধারণ করে সেই ক্ষেত্রেও সেই নারীর জরায়ুর ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যৌনাঙ্গ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে জরায়ুতে ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মহিলারা অনেকেই সন্তান জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য কিট বা কিছু ঔষধ সেবন করে থাকে।
এর কারণেও নারীদের জরায়ুতে ক্যান্সার রোগটি ধরা পড়ে থাকে। মহিলাদের অনেক কম বয়সে যদি বিয়ে হয়। তবে তাদের জরায়ুতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অস্বাস্থ্যকর সহবাসের ফলে নারীদের জরায়ুতে হিউম্যান প্যাপিলোমা নামক একটি ভাইরাস আক্রমণ করে। যার কারণে জরায়ুতে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়ে থাকে।
কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে
কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে এই প্রশ্নটি আজকাল প্রায় শোনা যাচ্ছে। কারণ যতই দিন যাচ্ছে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগী যখন একদম শেষ স্টেজে পৌঁছে যায় তখন রোগীকে কেমোথেরাপি প্রদান করা হয়ে থাকে। কেমোথেরাপি হল ক্যান্সার রোগের এমন একটি চিকিৎসা,
যা ক্যান্সার কোষকে বৃদ্ধি হতে বাধা প্রদান করে এবং ক্যান্সার কোষকে মেরে ফেলে। ক্যান্সার রোগের যেকোনো ধরনের চিকিৎসার খরচই অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। আমাদের এ বিষয়টি অবশ্যই জেনে রাখা প্রয়োজন কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে? এই বিষয়টি নিয়েই আমার আজকের আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক কেমোথেরাপির খরচ সম্পর্কে।
কেমোথেরাপির খরচ নির্ভর করে সম্পূর্ণটাই ক্যান্সার রোগীর ওপর। সকল ধরনের ক্যান্সার রোগীর কেমোথেরাপির খরচ একই রকম হয় না। বিভিন্ন স্টেজের ক্যান্সার রোগীর কেমোথেরাপির খরচ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আবার আমরা জানি ক্যান্সার রোগটি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন: ব্লাড ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার, ব্রেইন ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে
বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সার রোগের কেমোথেরাপির খরচ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আবার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের কেমো থেরাপির খরচ আলাদা হয়ে থাকে। বেসরকারি হাসপাতালের চাইতে সরকারি হাসপাতালের কেমোথেরাপির খরচ কম থাকে। তবে বাংলাদেশের কেমোথেরাপির গড় খরচ ৫ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা অথবা ১ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ধরা হয়ে থাকে।
জরায়ু ক্যান্সারের টিকা কখন দিতে হয়
জরায়ু ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল মেয়েদেরই জরায়ু ক্যান্সারের টিকা বা ভ্যাকসিন গ্রহণ করা অবশ্যই জরুরী। মেয়েরা যদি এই ভ্যাকসিন বা টিকাটি গ্রহণ না করে তবে ভবিষ্যতে জরায়ু মুখে ক্যান্সার হওয়ার অবশ্যই সম্ভাবনা থাকে। জরায়ু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে সকল মেয়েদের বয়সন্ধিকাল শুরু হওয়ার সাথে সাথেই জরায়ু মুখে ক্যান্সার প্রতিরোধকারী এই টিকাটি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন থেকে বলা হয়েছে, মেয়েদের ১১ থেকে ১২ বছর বয়স হওয়ার সাথে সাথেই জরায়ু ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণকারী ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করা উচিত। তবে কোথাও কোথাও বলা হয়েছে মেয়েদের ৯ বছর থেকে এই ভ্যাকসিন বা টিকাটি দেওয়া যাবে। কিশোর বয়সে কোন মহিলা যদি কোন কারণে এই ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করতে না পারে তাহলে প্রাপ্ত বয়সেও এই টিকা বা ভ্যাকসিনটি নেওয়া যাবে।
তবে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করা প্রয়োজন। মহিলাদের জরায়ুতে হিউম্যান প্যাপিলোমা নামক একটি ভাইরাস আক্রমণের ফলে জরায়ুতে ক্যান্সার কোষ উৎপন্ন হয়ে থাকে। তাই এই ভ্যাকসিন বা টিকাকে এইচপিভি টিকা বলা হয়ে থাকে।
কেমোথেরাপি দেওয়ার পর কি কি সমস্যা হয়
ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতি হলো কেমোথেরাপি বা রেডিও থেরাপি। ক্যান্সারের কোষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা রোগীকে কেমোথেরাপি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এই কেমোথেরাপি রোগী যখন গ্রহণ করে তখন রোগীর শরীরে কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। এটি সকল কেমোথেরাপি গ্রহণকারী ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রেই দেখা দিতে পারে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মানে হল শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হওয়া। এর আগে আমরা জানলাম কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে। ক্যান্সার রোগীকে কেমোথেরাপি দেওয়ার পর কি কি সমস্যা হয়ে থাকে সেগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
চুল ওঠা: ক্যান্সার রোগীকে যখন কেমোথেরাপি দেওয়া হয় তখন থেরাপির বিভিন্ন ঔষধ রোগীর চুলের উপর তীব্র প্রভাব ফেলে। এই ঔষধ গুলো এতটাই শক্তিশালী যে যেকোন দ্রুত ক্রমবর্ধনশীল কোষকে মেরে ফেলতে পারে। আমরা জানি ক্যান্সার কোষ খুব দ্রুত আমাদের সারা দেহে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। এই কাজটিকে বাধা প্রদান করে থাকে কেমোথেরাপি,
আরো পড়ুন: রক্তের এলার্জি বা চুলকানি লক্ষণসমূহ
যা আমাদের চুল, লোম, চোখের পাপড়ি, চোখের ভ্রু ইত্যাদিতে বৃদ্ধি পাওয়া কোষ গুলোকেউ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সেখান থেকেই ক্যান্সার রোগীদের চুল ও শরীরের অন্যান্য স্থানের লোম ঝরতে শুরু করে। তবে রোগীর কেমোথেরাপি গ্রহণ শেষ হয়ে গেলে নতুন ভাবে চুল গজাতে শুরু করে। এটি হলো কেমোথেরাপি গ্রহণের পর ক্যান্সার রোগীর প্রথম সমস্যা।
ক্ষুধা মন্দা বা খাবারে অরুচি ভাব: আমরা জানি যে আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ আক্রান্ত হলে খাবারের প্রতি আমাদের রুচি হারিয়ে যায়। এর পাশাপাশি ক্যান্সার রোগীকে কেমোথেরাপি প্রদান করা হলে আরও বেশি খাবারে অরুচি ভাব চলে আসে।
স্নায়ু কোষের ক্ষতি: কেমোথেরাপি গ্রহণের ফলে ক্যান্সার রোগীর স্নায়ুতন্ত্র এবং স্নায়ু কোষ তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে এটি রোগীর মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলে স্মরণশক্তি ও প্রায় কমে আসতে শুরু করা শরীরের জোর কমে যায় হাত পায়ে কাঁপুনি হতে থাকে রোগীর শরীরে প্রচুর ঠান্ডা অনুভূতি হয়।
ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি: কেমোথেরাপি গ্রহণের ফলে এটি ক্যান্সার রোগীর শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে নষ্ট করে দেয়। ইমিউন সিস্টেম বলতে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বোঝায়। এই ইমিউন সিস্টেম যখন নষ্ট হয়ে যায় তখন আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই আক্রান্ত করে।
রক্তশূন্যতা: ক্যান্সার রোগীকে কেমোথেরাপি দেওয়ার কারণে রোগীর রক্তের কোষগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। রক্তের হিমোগ্লোবিন কোষগুলো মারা যেতে পারে। রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার মান কমতে শুরু করে। ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
এছাড়া কিছু কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন: ক্লান্তি ভাব, বমি ভাব, দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ঘোরা ইত্যাদি।
লেখক এর শেষ মন্তব্য-কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে
ক্যান্সার রোগের বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার মধ্যে কেমোথেরাপি অন্যতম ক্যান্সার রোগের সকল চিকিৎসাই অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। তবে আমাদের সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেন আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হতে না পারে কি কি কারণে আমাদের দেহে ক্যান্সার রোগটি আক্রমণ করে থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
আশা করি আপনারা সকলেই আমার আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন এবং কেমো থেরাপি খরচ কত বাংলাদেশে সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। আমার আর্টিকেলটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগে থাকলে বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url