সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
আমরা অনেকেই জানিনা সকালে যে আসিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে তাই আমি আমার আর্টিকেলটিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। উক্ত বিষয়টির পাশাপাশি আমার আর্টিকেলটিতে আপনাদের প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
যেমন: চিয়া সিড কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়? আশা করি আমার আর্টিকেলটি আপনারা সকলেই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করবেন।
চিয়া সিড কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়
যেকোনো খাবার থেকে সঠিক পুষ্টি গ্রহণের জন্য এবং সঠিকভাবে উপকারিতা লাভ করতে সকালের নাস্তায় সেই খাবারটি খাওয়া উচিত। আমরা যদি কোন খাবার থেকে তার উপকারিতা গুলো লাভ করতে চাই তাহলে সকালে সেই খাবারটি সকালে খাওয়াই সবথেকে ভালো সময় আমরা অনেকেই এই প্রশ্নটি করে থাকি যে চিয়া সিড কিভাবে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। চিয়া সিডের উপকারিতা প্রচুর।
চিয়া সিড খাওয়ার পর তা থেকে উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই চিয়া সিডকে দুধ অথবা পানির সাথে গ্রহণ করতে হবে। চিয়া সিডকে শুকনো অবস্থায় খেলে এর কোন ফলাফলই আমরা পাবো না। কিন্তু আমরা যদি দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে রেখে এই পুষ্টিকর উপাদানটিকে সেবন করি তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। পানি অথবা দুধ যার সঙ্গে আমরা চিয়া শেড মিশিয়ে খাই না কেন,
আরো পড়ুন: কেমো থেরাপির খরচ কত বাংলাদেশে
সেটার একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে দুধ অথবা পানির সাথে আমরা যখন চিয়া সিডকে ভেজাবো তখন মোট মিশ্রনের তিন শতাংশ পানি অথবা জল হতে হবে এবং এক শতাংশ চিয়া সিট রাখতে হবে চিয়া সিটকে ভেজানো হয়ে গেলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর একটি চামচ দিয়ে মিশ্রণটিকে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে এখন কিছুক্ষণ পর মিশ্রণটি থকথকে জেলির মত হয়ে যাবে অর্থাৎ চিয়া সিড গুলো ফুলে দ্বিগুন হয়ে যাবে তারপর মিশ্রণটিকে আমরা সেবন করতে পারি এই পদ্ধতিতে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমরা বেশি উপকারিতা লাভ করতে পারব।
সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ গুনাগুন রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের অনেকাংশে উপকারে আসে। আজকাল চিয়া সিড স্বাস্থ্যকর ও জনপ্রিয় একটি পুষ্টির উৎস হয়ে উঠেছে। আমরা অনেকেই এই চিয়া সিডকে খেয়ে থাকি। তবে আমরা অনেকেই হয়তোবা সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানি না।
আমরা যদি সকালে চিয়া সিড খাই তাহলে এই উপকারী উপাদানটির বেশ কিছু গুনাগুন আমরা লাভ করতে পারব। এই চিয়া সিডকে আমরা বিভিন্ন ভাবে খেতে পারি। চলুন তাহলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
আমরা অনেকেই চিয়া সিড তো খেয়ে থাকি তবে এই চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম জানি না। তাই আজকে আমি আপনাদের জন্য চিয়া সিট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। সঠিক নিয়মে আমরা যদি চিয়া সিডকে গ্রহণ করে থাকি তাহলে সবচেয়ে বেশি ভালো ফলাফল পেতে পারবো। সকালে চিয়া সিড খাওয়ার অনেকগুলো নিয়ম রয়েছে। যেমন:
বিভিন্ন ধরনের পানীয় বা জুসের সাথে চিয়া সিড খাওয়া যাবে। আবার আমরা তো অনেকেই সালাদ খেতে পছন্দ করি। এই সালাদের সাথেও চিয়া সিড আমরা খেতে পারি। আমরা অনেকেই সকালের নাস্তায় দুধ পান করে থাকি চিয়া সিডকে আমরা দুধের সাথে মিশেও খেতে পারব।
এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ চিয়া সিড কিছুক্ষণের জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। চিয়া সিড গুলো যখন ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে তখন এটিকে আমরা সেই ভেজানো পানির সাথে খেতে পারি অথবা যেকোনো কিছু সাথে খাওয়া যেতে পারে।
সকালে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
ত্বকের যত্নে: আমরা যদি রোজ সকালে চিয়া সিড খাই তাহলে আমাদের ত্বকের যেকোনো ব্রণ, মেস্তা, ব্ল্যাকহেড, ডার্ক সার্কেল ইত্যাদি সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। ত্বক ফর্সা হবে, ত্বক হাইড্রেটেড হয়ে উঠবে।
ওজন কমায়: আমরা যদি প্রতিদিন সকাল করে চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলি তাহলে আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পাবে।
আরো পড়ুন: গরমে মেয়েদের ত্বককে সুস্থ রাখার উপায়
এলার্জি দূর করে: আপনারা জেনে অবাক হবেন যে চিয়া সিডে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের দেহের এলার্জি জাতীয় যেকোনো সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: রোজ সকালে আমরা যদি চিয়া সিড খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক অংশে বৃদ্ধি পাবে। এতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ফর্মুলা রয়েছে। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করে: আমাদের রক্তে থাকা গ্লুকোজ বা শর্করার পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে থাকার কারণে ডায়াবেটিস রোগটি আমাদের দেহে আক্রমণ করে থাকে। প্রতিদিন সকালে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ফলে ডায়াবেটিস রোগটি ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: আমাদের অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে রোজ সকালে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয়
আমরা যদি খালি পেটে চিয়া সিডকে খাই তাহলে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান এবং গুণাগুণ আমাদের শরীরে তাড়াতাড়ি কাজ করবে। চিয়া সিডকে আমরা অনেকেই অনেক ভাবে খেয়ে থাকি। তবে আমরা কি জানি খালি পেটে চিয়া সিড খেলে কি হয়? এই বিষয়টি অনেকেরই অজানা রয়েছে। এর আগে আমরা জেনেছি সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো খালি পেটে এই উপাদানটি গ্রহণ করলে কি হয়।
ওজন কমায়: আমরা অনেকেই আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চিয়া সিডকে গ্রহণ করে থাকে তবে আমরা কি জানি যে সকালে খালি পেটে এই পুষ্টিকর উপাদানটি খেলে এর গুনাগুন এবং কার্যকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায় ফলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেহের মেদ কমতে শুরু করে।
দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে: চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। যা খালি পেটে গ্রহণের ফলে আমাদের দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, আমাদের শরীরের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: আমাদের মাঝে অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য এর মত সমস্যা থাকে। আমরা যদি খালি পেটে ভেজানো চিয়া সিড খাই তাহলে আমাদের পেটের কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
চিয়া সিড আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারীর একটি উপাদান। তবে আমরা সবাই জানি যে সকল উপকারী উপাদানের কোন না কোন উপকারিতাও থাকতে পারে। চিয়া সিড খাওয়ারও কিছু কিছু অপকারিতা রয়েছে। সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জানার পাশাপাশি আমাদেরকে এটিও জেনে রাখা প্রয়োজন যে চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে। এটি জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। চলুন তাহলে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা।
- অনেকগুলো গবেষণায় দেখা গেছে যে আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড সেবন করে থাকি তবে তার ফলে আমাদের দেহে প্রটেস্ট ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- চিয়া সিড আমাদের রক্তে থাকা গ্লুকোজ বা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। তবে আমরা যদি বেশি পরিমাণে চিয়া সিড গ্রহণ করি তবে আমাদের রক্তে থাকা গ্লুকোজ বা শর্করা অধিক পরিমাণে কমে যাবে। যার ফলে আমাদের ব্লাড প্রেসার লো হতে থাকে। মানুষের দেহের ব্লাড প্রেসার যদি খুব বেশি পরিমাণে কমে যায় তখন মানুষ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- আমরা জানি চিয়া সিড আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজনকে কমিয়ে দেয়। তবে আমরা যদি চিয়া সিডকে বেশি পরিমাণে খাই তাহলে আমাদের দেহের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমতে শুরু করবে। অনিয়ন্ত্রিত ওজন হ্রাস আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত অনুপযোগী।
- চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই পানি পান করার পরিমাণ ঠিক রেখে চিয়া সিড সেবন করা উচিত।
- গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে চিয়া সিড সেবনের ফলে কিছু কিছু সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিড সেট গ্রহণ করা উচিত।
- চিয়া সিড খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে হিসেবে পানি পানের পরিমাণ সঠিক রাখতে হবে।
চিয়া সিড পানিতে কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হয়
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়মই হলো পানি অথবা দুধের সাথে ভিজিয়ে খাওয়া। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে চিয়া সিড পানিতে কত সময় ভিজিয়ে রাখতে হয়। আমরা অনেক জায়গাতে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। আর এই জন্যই আমি আমার সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আরো পড়ুন: কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়
এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: অনেকেই ভাবেন চিয়া সিডকে সারারাত ভিজিয়ে রেখে তারপর সেটা সকালে পান করতে হয়। আবার অনেকেই ভাবেন চিয়া সিড পানিতে ভেজানোর পর 30 মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। তবে এসব ধারণা বাদ দিয়ে যেটা সঠিক নিয়ম সেই দিকে আসা যাক। চিয়া সিডকে আমরা যখনই খাই না কেন সেটিকে প্রথমে ভিজিয়ে নিতে হয়।
এর জন্য এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চা চামচ চিয়া সিড দিতে হবে। তারপর সেটিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিলেই ঘন জেলির মত একটি মিশ্রণ তৈরি হবে। মিশ্রণটিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিলেই খাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে। চিয়া সিড গুলো পানিতে ভিজে ফুলে যাবে এবং পিচ্ছিল হয়ে উঠবে। চিয়া সিড পানিতে ভিজিয়ে খাওয়ার জন্য এতোটুকু সময়ই যথেষ্ট আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন চিয়া সিড পানিতে কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হয়।
লেখক এর শেষ মন্তব্য-সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
চিয়া সিড গ্রহণের ফলে আমরা এর মাধ্যমে প্রচুর উপকারিতা লাভ করতে পারব। যদি আমরা সঠিক নিয়মে এই উপকারী উপাদানটি গ্রহণ করে থাকে তাহলে এর গুনাগুন এবং পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে। আশা করি আপনারা সকলেই আমার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে সকালে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আশা করি আমার আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা কিছুটা উপকৃত হয়েছেন। আমার আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url