চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না
চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না? এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। যা আমাদের জন্য জানা প্রয়োজন। আপনারা অনেকেই হয়তো এই সম্পর্কে অনেক জায়গাতে খোঁজাখুঁজি করে সঠিক তথ্য পান নি। তাই আমি আমার আজকের আর্টিকেলটি উক্ত বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছি।
এটি ছাড়াও আমার আর্টিকেলটিতে আপনাদের প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেমন: ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন এবং আশা করছি কিছুটা উপকৃত হবেন।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
আজকাল প্রায় সকল স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের ডায়েট চার্টে রয়েছে চিয়া সিড। চিয়া সিড দেখতে অনেকটা তিলের মত। এটি ছোট ছোট কালো দানা হয়ে থাকে। তার মধ্যে কিছু কিছু সাদা দানাও থাকে। চিয়া সিডের উৎপত্তিস্থল হলো আমেরিকা এবং মেক্সিকোর মরুভূমিতে। চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কেম্পফেরল,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চিয়া সিডকে আমরা যেভাবেই খাই না কেন সেটি আমাদের ওজন কমাবেই। ওজন কমাতে বিভিন্নভাবে চিয়া সিড আমরা খেতে পারি। যেমন: সাদা পানিতে ভিজিয়ে রেখে আমরা চিয়া সিড খেতে পারব। আবার দুধের সাথে চিয়া সিডকে ভিজিয়ে রেখেও আমরা খেতে পারবো। আবার সাদা পানি ও লেবুর রসের সাথে চিয়া সিট ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের স্মুদি দিয়েও চিয়া সিড খেলে, চিয়া সিডের পুডিং তৈরি করে খাওয়ার ফলেও ওজন কমতে শুরু করে। এছাড়াও টক দই দিয়েও চিয়া সিড খেলে আমাদের শরীরের ওজন কমতে শুরু করবে।
চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না
আমরা অনেকেই জানি যে চিয়া সিড থেকে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। যেমন: ওজন কমে, ত্বক সুন্দর হয়, শরীরের জন্য অনেক উপকারী হয়ে থাকে, শরীর ঠান্ডা থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের সমাধানও মিলে। তবে আমরা কি এটা জানি যে সকলের জন্যই চিয়া সিড প্রযোজ্য নয়। যেকোনো কিছুর উপকারিতা সবাই লাভ করতে পারে না। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে অনেকেরই অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
কারো কারো ক্ষেত্রে চিয়া সীড সেবন করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত নয় যাদের উচ্চ রক্তচাপ, এলার্জির সমস্যা রয়েছে, রক্ত জমাট বেধে যায় এরকম সমস্যা থাকলে, শরীরে ডায়াবেটিস থাকলে, পেটের যে কোন সমস্যা থাকলে, কোন নারী গর্ভধারণ অবস্থায় থাকলে ইত্যাদি অবস্থায় আমাদেরকে চিয়া সিড এড়িয়ে চলতে হবে। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।
উচ্চ রক্ত চাপ: আমরা অনেকেই উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগে থাকি। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক ধরনের ঔষধ সেবন করতে হয়। সেই ক্ষেত্রে চিয়া সিড গ্রহণ করা উচিত নয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঔষধ সেবনের পাশাপাশি আমরা যদি চিয়া সিড গ্রহণ করি তাহলে এই দুটি একসঙ্গে বিক্রিয়া হয়ে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
আরো পড়ুন: দুধের সর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
গর্ভধারণ অবস্থায়: আমরা জানি চিয়া সিড আমাদের সকলের জন্যই অত্যন্ত উপকারী একটি বীজ। তবে গর্ভধারণ অবস্থায় এটি আমাদের জন্য কতটা পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর তার সঠিক কোন তথ্য দেওয়া যায় না। তাই অবশ্যই গর্ভধারণ অবস্থায় চিয়া সিড গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে: আমরা আমাদের ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনসুলিন গ্রহণ করে থাকি। এই সময় কখনোই চিয়া সিড গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ ইনসুলিনের সাথেও চিয়া সিড বিক্রিয়া ঘটিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এলার্জি: আমাদের শরীরে অনেকেরই এলার্জির সমস্যা থাকে। এই এলার্জি আবার বিভিন্ন খাবারের বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যাদের বিভিন্ন ধরনের বীজ খাওয়ার পর শরীরের এলার্জি বৃদ্ধি পায় তাদের এই চিয়া সিড খাওয়া উচিত নয়।
আশা করি আপনারা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন যে চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না।
চিয়া সিড এলার্জি আছে কি
চিয়া সিড থেকে বিভিন্ন উপকারিতা লাভ করতে আমরা এটিকে গ্রহণ করে থাকি। তবে আমরা কি এই বিষয়টি জানি যে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে এলার্জি হয় কিনা? এই বিষয়টি আমাদের জন্য জেনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই আমি আমার চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে চিয়া সিডে এলার্জি আছে কিনা এই বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করছি।
অনেকেরই চিয়া সিড খাওয়ার ফলে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় বা কারো শরীরে অনেক আগে থেকেই এলার্জি থেকে থাকলে চিয়া সিড খাওয়ার পরে এলার্জির প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। এই কথাটি সত্য যে চিয়া সিডে এলার্জি আছে। তবে সবার ক্ষেত্রেই এই কথাটি প্রযোজ্য নয়। আমরা অনেকেই এই চিয়া সিড খেয়ে থাকি। তবে সকলেরই চিয়া সিডটি খাওয়ার পর যে এলার্জি সৃষ্টি হবে এমনটা নয়।
আরো পড়ুন: শিশুদের পুষ্টির অভাবে কি রোগ হয়
আমাদের অনেকের শরীরে বিভিন্ন ধরনের বীজ খাওয়ার পর এলার্জি সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই সকল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। চিয়া সিড খাওয়ার ফলে অনেকের শরীরে বিভিন্ন ধরনের র্যাশ, এলার্জি বা চুলকানি, ছোট ছোট দানা বের হয়। চিয়া সিড খাওয়ার পর এরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে চিয়া সিড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
চিয়া সিড কি দুধের সাথে খাওয়া যায়
আজকাল চিয়া সিড অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ডায়েট খাবার হয়ে উঠেছে। প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ এই চিয়া সিডকে আমরা নানাভাবে খেয়ে থাকি। আবার আমরা অনেকেই এই বিষয়টি জানতে চাই যে চিয়া সিড দুধের সাথে খাওয়া যায় কিনা? তাই আমি আমার চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। চিয়া সিড কি দুধের সাথে খাওয়া যায়?
এই প্রশ্নের জবাব হলো হ্যাঁ, চিয়া সিডকে আমরা দুধের সাথে খেতে পারব। আমরা যারা চিয়া সিড খাই বা খেয়েছি সকলেই জানি যে চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। তাই চিয়া সিডকে আমরা সাদা পানির সাথে মিশিয়েও খেতে পারি। আবার এর পাশাপাশি আমরা এই চিয়া সিডকে বিভিন্ন প্রকার সালাদ, জুস, দুধ যেকোনো কিছুর সাথেই মিশিয়ে খেতে পারব।
দুধ ও চিয়া সিড আমরা অনেকেই আলাদা আলাদা ভাবে খেয়ে থাকি। তবে আমরা যদি দুধ এবং চিয়া সীডকে একসঙ্গে সেবন করি তাহলে এই দুটি পুষ্টিকর খাবারের উপাদান ও গুনাগুন গুলো একসাথে হয়ে পুষ্টির পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে। ফলে দুধ ও চিয়ার সিডার মিশ্রণটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং পুষ্টিকর একটি খাবার হয়ে উঠবে।
তবে একটি কথা মাথায় রেখে দুধ এবং চিয়া সিড কে একসঙ্গে মিশ্রিত করতে হবে। সেটি হল দুধকে আমরা গরম অবস্থায় খেয়ে থাকি আর চিয়া সিড কে আমরা কিছুক্ষন ভিজিয়ে গ্রহণ করে থাকি। গরম দুধে চিয়া সিড ভিজে রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় হল ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এর চেয়ে বেশি নয়। আমরা যদি গরম দুধে চিয়া সিটকে খুব বেশিক্ষণের জন্য ভিজিয়ে রাখে তাহলে ।
আরো পড়ুন: ১ মাসে ৫ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
চিয়া সিডের গুনাগুন ও পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে আমরা দুধ এবং চিয়া সিড একসঙ্গে মিশিয়ে অবশ্যই খেতে পারি। এটিতে কোন বাধা বা কোন মানা নেই যে দুধ এবং চিয়া সিড একসঙ্গে খাওয়া যাবে না। অর্থাৎ দুধের সাথে অবশ্যই চিয়া সিড ভিজিয়ে সেবন করা যায়।
লেখক এর শেষ মন্তব্য-চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না
সুপ্রিয় পাঠক আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন যে চিয়া সিড কাদের খাওয়া উচিত না। চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যাদের এই পুষ্টিকর উপাদানটি খাওয়ার ফলে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা সমস্যা সৃষ্টি হয় তাদেরকে অবশ্যই এই উপাদানটিকে এড়িয়ে চলতে হবে।
আশা করি আমার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা কিছুটা উপকৃত হয়েছেন। আজকের আমার আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url