কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

আমরা কি সবাই জানি, কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়? আমরা হয়তোবা অনেকেই এই সম্পর্কে জানি। তবে এমন অনেকেই আছেন যারা এই বিষয়ে তেমন ধারণা নেই। তাই আমি আমার আজকের আর্টিকেলটিতে কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের ঘুম কম হয় এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 
উক্ত বিষয়টি ছাড়াও আমি আমার আর্টিকেলটিতে আপনাদের প্রয়োজন হতে পারে এমন আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। যেমন: রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয় ঘুম, কম হওয়ার কারণ কি, কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ইত্যাদি। আশা করি আমার আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা কিছুটা উপকৃত হবেন। সম্পূর্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয়

আমরা আজকাল প্রায় সবাই রাতে দেরিতে ঘুমিয়ে থাকি। এটি ধীরে ধীরে আমাদের প্রতি রাতের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা কি জানি এই অভ্যাসটি আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে? আমরা অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে না ভেবে রাত্রে সঠিক সময় অনুযায়ী না ঘুমিয়ে অনেকটা দেরি করে ঘুমাই এবং সকালেও ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে ফেলি। আবার অনেকেরই রাতে ঘুমানোর সময় ঘুম আসে না, ঘুমের মাঝে বারবার বিরতি হয়। 

আরো পড়ুন: রাত জাগার ক্ষতিকর দিক জানেন কি

এগুলোর কারণেও রাতের ঘুম দেরিতে হয়ে যায়। অবশ্যই আমাদের রাতে দেরিতে করে ঘুমানোর অভ্যাসটি পরিবর্তন করা উচিত। আমরা যারা জানি না যে রাতে দেরিতে ঘুমালে কি হয় বা কি কি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে তাদেরকে অবশ্যই এই বিষয়গুলো জেনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই আমি আমার আজকের কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে রাতে দেরিতে ঘুমালে কি কি সমস্যা হতে পারে এটি নিয়ে আলোচনা করছি। 
চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। চিকিৎসকরা সব সময় আমাদের রাত ৯ টা থেকে ১০ টা এই সময়ের মধ্যে ঘুমাতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ আমরা যদি রাত ১১ টা থেকে ১২ টার পর ঘুমাই তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর দিক হয়ে দাঁড়াবে। আমরা যদি রাতে দেরিতে ঘুমাই এর ফলে আমাদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও আমাদের দেহে বিভিন্ন ধরনের মরণব্যাধি রোগ বাসা বাধতে শুরু করে। 

আরো পড়ুন: অতিরিক্ত ঘুমালে কি ক্ষতি হয়

যেমন: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে, যৌন সমস্যা, ওজন কমে যাওয়া, খাবারের প্রতি অরুচি, হৃদ রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তস্বল্পতা, স্নায়বিক রোগ, দেহে পানির ঘাটতি, স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। এছাড়াও অতিরিক্ত রাত জেগে দেরিতে ঘুমালে ত্বকের সমস্যা, ব্রনের সমস্যা, চোখের সমস্যা, চোখের চারিদিকে কালো দাগ হয়ে থাকে, অতিরিক্ত চুল ঝরে পড়া ইত্যাদি।

দীর্ঘস্থায়ী রোগ: আমরা যদি রাত্রে অনেক দেরিতে ঘুমাই তাহলে আমাদের শরীরে দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন ধরনের রোগ জায়গা করে নেবে। এর মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, স্ট্রোক ইত্যাদি মরণব্যাধি রোগ।

ওজন কমতে শুরু করে: আমাদের অবশ্যই জেনে রাখা উচিত যে, আমরা যদি প্রতিদিন রাতে অনেকটা দেরি করে ঘুমাই তবে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর হয়ে উঠবে। রাতে দেরিতে ঘুমানোর ফলে আমাদের খাবার গ্রহণের প্রতি অনীহা দেখা দিবে। খাবারের প্রতি অরুচি ভাব প্রকাশ পাবে। যার ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হবে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে ওজনও কমতে শুরু হবে। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত খারাপ একটি দিক।

ত্বকের সমস্যা: আমরা যদি রাতে দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলি তবে এর ফল আমাদের ত্বকের নানা ধরনের দেখা দিবে। আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ব্রণের কালো দাগ হওয়া, চোখের চারপাশে কালো দাগ পড়ে যাবে, মেস্তা ব্রণের সমস্যা ত্বক ডিহাইড্রেশন হওয়া ইত্যাদি।

শরীর দুর্বল হওয়া: অতিরিক্ত পরিমাণে রাত জেগে দেরিতে ঘুমানোর ফলে আমাদের শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ আমাদের ঘুমের অনেকটাই ঘাটতি রয়ে যায়। আবার রাতে দেরিতে ঘুমানোর কারণে আমাদের খাবারের প্রতি অরুচি দেখা দেয়। ফলে খাবার গ্রহণের ঘাটতির কারণে আমাদের শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন কাজের প্রতি তেমন মনোযোগ দেওয়া যায় না।

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে আমাদের ঘুমের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। সেই সকল কারণ সমূহের মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হলো ভিটামিনের অভাব। ঘুম কম হওয়া অবশ্যই আমাদের জন্য অত্যন্ত খারাপ একটি দিক। সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে, কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়ে থাকে? আজকের আমার আর্টিকেলটির মূল আলোচ্য বিষয় হলো কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়? 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ভালো ঘুমের সাথে অত্যন্ত গভীর সম্পর্ক রয়েছে মেলাটোনিন হরমোনের। আর এই মেলাটোনিন হরমোন ক্ষরণে সহায়তা করে থাকে ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি ছাড়াও ঘুমের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন আরো একটি ভিটামিন হলো ভিটামিন বি ১২। আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন বি ১২ এর মাত্রা পরিমাণে কম থাকে, 

আরো পড়ুন: রাত জাগলে কি ব্রণ হয়

তাহলে এটি মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ কমার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং ঘুমের পরিমাণ কমে যায়। আশা করি ইতিমধ্যেই আপনারা বুঝতে পেরে গেছেন যে, কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের ঘুম কম হয় আমরা যদি আমাদের ঘুমের পরিমাণ সঠিক রাখতে চাই, তবে আমাদের অবশ্যই ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি ১২ যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। 

সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ সঠিক মাপে হবে। এতে আমাদের ঘুম কম হওয়ার সমস্যা কমে যাবে। সুতরাং আমরা বলতে পারি আমাদের ঘুমের পরিমাণ ঠিক রাখতে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি ১২ অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ ঘুমের সাথে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন বি ১২ এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

ঘুম কম হওয়ার কারণ কি

আমরা কি সবাই জানি যে, ঘুম কম হওয়ার কারণ কি? এখনো অনেকের কাছে এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকটাই অজানা রয়েছে তাই আমি আমার আজকের কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় বিষয়ক আর্টিকেলটিতে ঘুম কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। চলুন তাহলে এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ঘুম কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই কর্মব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমাদের ঘুমের অনিয়ম করে ফেলি। 
যার ফলে আমাদের রাতে দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস হয়ে যায়। এর কারণে আমাদের ঘুমের চাহিদাও অনেকটাই কমে যায়। এমন আরো কিছু কিছু বিষয় বা কারণ রয়েছে যার ফলে আমাদের ঘুমের চাহিদা কমতে শুরু করে এবং ঘুমের পরিমাণও অনেকটাই কমে যায়। অনিয়মিত লাইফ স্টাইল অনুযায়ী চলার মাধ্যমে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যার ফলে ঘুম কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও যে সকল কারণে আমাদের ঘুমের পরিমাণ কমে যায় সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো:
  • দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা করে থাকে এটি আমাদের।
  • ঘুমের উপর অনেকটাই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে যার ফলে রাতে ঘুম কম হওয়ার সম্ভাবনাসৃষ্টি হয়।
  • অনিয়ন্ত্রিতভাবে চা, কফি, তামাক, জর্দা, ধূমপান, অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় গ্রহণের ফলেও আমাদের দৈনন্দিন ঘুমের পরিমাণ কমে যায়।
  • পরিবেশগত কিছু কিছু কারণেও আমাদের ঘুম কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন: আমরা যেই ঘরে ঘুমাই সেই ঘরটি প্রচুর কোলাহল যুক্ত হলে বিছানা আরামদায়ক না হলে ঘরে প্রচুর আলো থাকলে অনেকেরই ঘুম কম হতে পারে।
  • অনেকের ক্ষেত্রে পেটে ক্ষুধা থাকলে ঘুম কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আবার কোন কোন কারণে যদি দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক পরিশ্রম খুব কম হয় সে ক্ষেত্রেও ঘুম কম হতে পারে।
  • আমাদের শরীরে যদি নার্ভের কোন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে ঘুম কম হতে পারে।
  • কিছু ভিটামিনের অভাবেও আমাদের ঘুম কম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

লেখকের শেষ মন্তব্য-কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

বেশি পরিমাণে ঘুমানো যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক, ঠিক তেমনি ঘুমের পরিমাণ কম হওয়ার বিষয়টাও আমাদের জন্য অনেকটাই চিন্তার কারণ। প্রতিদিন ঘুম কম বেশি হলে সেটি অবশ্যই আমাদের শরীরের ক্ষতিসাধন করবে। অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা উচিত যে, কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়? বিভিন্ন কারণে আমাদের ঘুমের পরিমাণ কম হতে পারে।

এর মধ্যে একটি কারণ রয়েছে ভিটামিনের অভাব। সুপ্রিয় পাঠক আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি পরে আজকের মূল আলোচ্য বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং কিছুটা উপকৃত হয়েছেন। আমার আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url