IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

আপনি কি IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন দেশে যেতে ইচ্ছুক? তাহলে আজকের IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায় সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেকটাই উপকারী হতে চলেছেইউরোপে ঘুরতে যাওয়াটা একটা দারুণ স্বপ্ন, তাই না? কিন্তু ভাষার পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা। IELTS নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই! 
এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে IELTS ছাড়াই আপনি ভিসা পেতে পারেন। চলুন, সেই দেশগুলো খুঁজে বের করি আর জেনে নেই ভিসার নিয়মকানুন।ইউরোপে পড়াশোনা, কাজ বা শুধু ঘোরার জন্য যাওয়া অনেকেরই ইচ্ছে থাকে। এখানকার সংস্কৃতি আর সৌন্দর্য সবার মন কাড়ে। IELTS ছাড়া কীভাবে এই স্বপ্ন সত্যি করা যায়, সেটা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।

IELTS ছাড়া ইউরোপের সেরা কিছু দেশ

ইউরোপের অনেক দেশেই ভিসার জন্য IELTS দরকার হয় না। আমরা সেই দেশগুলো দেখব এবং তাদের ভিসার নিয়মকানুন নিয়ে আলোচনা করব। সেই সাথে, পর্যটকদের জন্য দেশগুলোর বিশেষ আকর্ষণগুলোও তুলে ধরব। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায় এই সম্পর্কে  বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।
পোল্যান্ড
পোল্যান্ডে কাজের ভিসা (work visa) এবং স্টুডেন্ট ভিসার (student visa) জন্য কিছু নিয়ম আছে। পোল্যান্ডের ওয়ারশ (Warsaw) এবং ক্রাকো (Krakow) শহরগুলো খুবই জনপ্রিয়। এখানে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপত্যও রয়েছে যা দেখার মতো। পোল্যান্ডে জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলকভাবে কম। এখানে অন্য রাষ্ট্রের মানুষের জন্য কাজের অনেক সুযোগ আছে। বিশেষ করে, তথ্য প্রযুক্তি (information technology) এবং ইঞ্জিনিয়ারিং (engineering) খাতে অনেক চাকরি পাওয়া যায়।

পোল্যান্ডের ভিসার প্রকারভেদ পোল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের ভিসা পাওয়া যায়। কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, আর পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা নিতে হয়। এছাড়া, ফ্যামিলি ভিসারও সুযোগ আছে। জীবনযাত্রার খরচ এবং কাজের সুযোগ পোল্যান্ডে থাকা খাওয়ার খরচ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ থেকে কম। এখানে প্রতি মাসে প্রায় ৫০০ থেকে ৮০০ ইউরো ডলার খরচ হতে পারে। তথ্য প্রযুক্তি, উৎপাদন, এবং সার্ভিস সেক্টরে কাজের সুযোগ রয়েছে।

আরো পড়ুন: ওয়ালটন ফ্রিজ কিস্তিতে কেনার নিয়ম ২০২৫

হাঙ্গেরি
হাঙ্গেরি অনেক সুন্দর একটা দেশ। এখানে ভিসার নিয়মকানুনও বেশ সহজ। হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট শহরটি (Budapest) অনেকের কাছে খুব পছন্দের। এখানে অনেক ঐতিহাসিক দুর্গ (historical castles) ও সংস্কৃতি দেখার মতো।যদি আপনি কম খরচে থাকতে চান, হাঙ্গেরি আপনার জন্য ভালো একটা বিকল্প। এমন অনেকেই আছেন, যারা অন্য দেশ থেকে এসে এখানে বসবাস করছেন।

হাঙ্গেরিতে ভিসার নিয়মাবলী হাঙ্গেরিতে ভিসার জন্য আবেদন করা বেশ সহজ। এখানে স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা, এবং ফ্যামিলি ভিসার সুযোগ আছে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। পড়াশোনার সুযোগ IELTS ছাড়া হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার সুযোগ আছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়। স্কলারশিপের (scholarship) জন্য আবেদন করলে খরচ আরও কম হতে পারে।

পর্তুগাল
পর্তুগাল খুব সুন্দর একটা দেশ। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য খুবই মনোরম। পর্তুগালে D7 ভিসা নামে একটা ভিসা আছে, যেটা অনেকের জন্য খুব উপযোগী। পর্তুগালে থাকার খরচও তুলনামূলকভাবে কম। এখানকার মানুষজনও খুব মিশুক। তাই, এখানে এসে থাকতে আপনার কোনো সমস্যা হবে না।

পর্তুগালের ভিসা এবং বসবাসের নিয়ম পর্তুগালে D7 ভিসা তাদের জন্য, যাদের নিয়মিত আয় আছে। এই ভিসা ব্যবহার করে আপনি পর্তুগালে থাকতে পারবেন। এছাড়া, এখানে গোল্ডেন ভিসা (golden visa) নামে একটা প্রোগ্রামও আছে, যেখানে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়ন্ত্রণ করতে কীস্ট্রোক লগিং

ভাষা এবং সংস্কৃতি পর্তুগালের ভাষা পর্তুগিজ (portuguese)। তবে, এখানে অনেক মানুষ ইংরেজিও বোঝে। পর্তুগিজ সংস্কৃতি খুব সমৃদ্ধ। এখানকার খাবার, সঙ্গীত, এবং ঐতিহ্য অনেক আকর্ষণীয়।

স্পেন
স্পেন খুব প্রাণবন্ত একটা দেশ। এখানে নন-লুকরেটিভ ভিসা (Non-Lucrative Visa) নামে একটা ভিসা আছে, যেটা কাজ না করে থাকার জন্য উপযুক্ত। স্পেনের সংস্কৃতি ও বিভিন্ন অঞ্চলের সৌন্দর্য অনেক পর্যটকের কাছে প্রিয়। স্পেনে থাকার খরচ একটু বেশি। তবে, কিছু টিপস অনুসরণ করলে খরচ কমানো সম্ভব।

স্পেনে ভিসার জন্য আবেদন স্পেনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনার কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এর মধ্যে পাসপোর্ট, অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম, এবং আর্থিক অবস্থার প্রমাণ অন্যতম। জীবনযাত্রার খরচ স্পেনে প্রতি মাসে থাকার খরচ প্রায় ৭০০ থেকে ১০০০ ইউরো ডলার হতে পারে। তবে, বড় শহরগুলোতে খরচ একটু বেশি। খাবার, পরিবহন, এবং বিনোদনের খরচ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

উপরোক্ত দেশগুলো ছাড়াও আরো কিছু দেশ রয়েছে যেগুলোতে ছাড়া যাওয়া যায়। যেমন: কানাডা, থাইল্যান্ড, জাপান, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া, ইতালি, নরওয়ে ইত্যাদি।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ইউরোপের ভিসার জন্য কিছু সাধারণ কাগজপত্র লাগে। আপনার পাসপোর্ট, ভিসার আবেদনপত্র, আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ, ভ্রমণ বীমা ইত্যাদি দরকার হবে। আজকের IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায় সম্পর্কিত আর্টিকেলটির এই পর্যায়ে কাগজ পত্রগুলো কিভাবে তৈরি করবেন, তা জেনে নিন।
সাধারণ কাগজপত্র
ভিসার জন্য আবেদনের সময় কিছু সাধারণ কাগজপত্র লাগে। যেমন:
  • বৈধ পাসপোর্ট (valid passport)
  • ভিসা আবেদনপত্র (visa application form)
  • ছবি (photographs)
  • আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ (proof of financial stability)
  • ভ্রমণ বীমা (travel insurance)
  • সব তথ্য যেন সঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
অতিরিক্ত কাগজপত্র
কিছু ভিসার জন্য বাড়তি কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন:
  • কাজের ভিসার (work visa) জন্য কাজের Contrato (employment contract).
  • ছাত্র ভিসার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভর্তির প্রমাণপত্র
সব কাগজপত্র আগে থেকে গুছিয়ে রাখলে আপনার কাজ সহজ হয়ে যাবে।

ভাষা শিক্ষার বিকল্প
ইউরোপে যেতে চান, কিন্তু ভাষা নিয়ে চিন্তা? সমস্যা নেই! অনলাইনে অনেক কোর্স (online courses) আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আপনি ইউরোপিয়ান ভাষা শিখতে পারেন।

অনলাইন কোর্স
Duolingo, Babbel, Coursera-র মতো অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে, যেখানে আপনি সহজে ভাষা শিখতে পারবেন।
  1. Duolingo: এটি একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিনামূল্যে ভাষা শেখা যায়।
  2. Babbel: এখানে টাকা দিয়ে কোর্স করতে হয়, কিন্তু শেখার মান ভালো।
  3. Coursera: এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের (universities) শিক্ষকরা ভাষা শেখান।
অনলাইনে শিখলে আপনি নিজের সময় অনুযায়ী শিখতে পারবেন।

ভাষা বিনিময় প্রোগ্রাম
ভাষা বিনিময়ের মাধ্যমেও আপনি ভাষা শিখতে পারেন। এতে আপনি একজন স্থানীয় ভাষাভাষীর সাথে কথা বলার সুযোগ পাবেন। HelloTalk: এই অ্যাপের (app) মাধ্যমে আপনি ভাষা শিখতে পারবেন এবং অন্যদের শেখাতে পারবেন। Tandem: এখানেও আপনি ভাষা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন। এভাবে প্র্যাকটিস করলে খুব সহজে ভাষা শেখা যায়।

কাজের সুযোগ এবং ক্যারিয়ার 

ইউরোপে অনেক কাজের সুযোগ আছে। বিশেষ করে, যারা ইংরেজি জানেন, তাদের জন্য অনেক সুবিধা। কোন কোন সেক্টরে (sectors) বেশি কাজের সুযোগ, চলুন জেনে নেই।

কোন সেক্টরে কাজের সুযোগ বেশি
আইটি (information technology): ইউরোপে আইটি সেক্টরে প্রচুর কাজ রয়েছে।
পর্যটন (tourism): পর্যটন সেক্টরেও অনেক কাজের সুযোগ আছে।
স্বাস্থ্যসেবা (healthcare): স্বাস্থ্যসেবা সেক্টরেও অনেক লোক দরকার।
এই সেক্টর গুলোতে আপনি সহজেই কাজ খুঁজে নিতে পারেন।

কিভাবে আবেদন করবেন
প্রথমে বিভিন্ন জব পোর্টালে আপনার প্রোফাইল তৈরি করুন। তারপর আপনার সিভি এবং কভার লেটার আপডেট করুন। এরপর পছন্দের চাকরিতে আবেদন করুন। সঠিকভাবে আবেদন করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।

লেখকের শেষ মন্তব্য IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়

সুপ্রিয় পাঠক আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পেরেছেন। আশা করি আজকের আমার আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে কিছুটা উপকৃত হয়েছেন।

IELTS ছাড়া ইউরোপে যাওয়া সম্ভব, শুধু দরকার একটু চেষ্টা আর সঠিক প্ল্যানিং। পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, পর্তুগাল, স্পেনের মতো দেশগুলোতে ভিসার জন্য আবেদন করে আপনিও আপনার ইউরোপ ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।

IELTS ছাড়া ইউরোপের কোন কোন দেশে যাওয়া যায়? সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন। যাতে করে তারাও আমার ডুমুর ফল সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে কিছুটা উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ।

এই ব্লগ পোস্টে আমরা ভিসার নিয়মাবলী, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভাষা শিক্ষার বিকল্প, এবং কাজের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছি। ইউরোপ নিয়ে যদি আপনার আরো কিছু জানার থাকে, তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url